
নিজস্ব প্রতিবেদক: লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকায় মৃত্যুবরণ করা শরীয়তপুরের ইমরান খান সুজন নামে এক যুবকের মরদেহ পৌঁছে পরিবারের কাছে। রবিবার (৩০ জুন) সকাল ৯টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কেদারপুরে আনা হয় মরদেহটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মঞ্জুরুল হক আকন্দ।
নিহত ইমরান খান সুজন উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের কেদারপুর গ্রামের আবদুল মান্নান খানের ছেলে । দুই ভাই এক বোনের মধ্যে ইমরানই বড়।
ইমরান খান সুজনের ছোট ভাই শোভন খান জানান, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে দালালের প্রলোভনে সুদানে পাড়ি জমান ইমরান খান সুজন। পরে সেখান থেকে লিবিয়া যান। ছয়মাস পর ২৯ আগস্ট লিবিয়া থেকে অভিবাসীবাহী নৌকায় ইতালি যাওয়ার সময় তিউনিসিয়ার উপকূলে পৌঁছলে নৌকার তেল, সঙ্গে থাকা পানি ও খাবার ফুরিয়ে যায়। পাঁচদিন পর অন্যান্যদের সঙ্গে ইমরানও খাবার না পেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন । পরে নৌকাতেই মারা যান ইমরান। পরবর্তীতে তাদের বহনকারী নৌকাটি ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশ মাল্টায় পৌঁছালে মৃত ও জীবিত থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করেন দেশটির কোস্ট গার্ডের সদস্যরা।
পরে মরদেহটি মাল্টার মর্গে রাখা হয়। পরে তিন মাস পর পরিবার ইমরানের মৃত্যুর খবর পায়। নড়িয়ার ইতালি প্রবাসীরা ইমরানের মরদেহটি সনাক্ত করেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, ইমরানের মরদেহ দেশে আনা ব্যয়বহুল জেনে স্বজনরা মরদেহ দেশে আনতে অনীহা প্রকাশ করেন। শেষে ১১মাস মর্গে থাকার পর ইতালী প্রবাসীদের সহায়তায় মাল্টার মর্গ থেকে তার মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে রওনা দেয়। শনিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের সময় ইমরানের মরদেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছে। পরে রবিবার সকাল ৯টার দিকে শরীয়তপুরের গ্রামের বাড়িতে ইমরানের মরদেহ নিয়ে আসে স্বজনরা। দুপুর ২টার দিকে ইমরানের নামাজের জানাজা শেষে নড়িয়া মুলফতৎগঞ্জ মাদরাসা সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
নিহত ভাই শোভন খান বলেন, যারা ইমরান ভাইকে প্রলোভন দেখিয়ে ইতালি পাঠানোর নাম করে নৌকায় তুলেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।