
শরীয়তপুরে সিএনজি ও পেট্রোল ইঞ্জিন চালিত থ্রি হুইল অটো গাড়ির শো-রুমে হামলা চালিয়েছে বাস শ্রমিকরা। এ সময় বাস শ্রমিকদের হামলায় শো-রুমের আটটি সিএনজি ও পেট্রোল ইঞ্জিন চালিত থ্রি হুইল অটো গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) শরীয়তপুর জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ও ডিবিসি টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি বিএম ইশ্রাফিল সহ ৫ জন আহত হয়েছে। সোমবার (২৯ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে জেলা শহরের কোট সংলগ্ন সদর রোডে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা একটি বাসের কাচ ভাংচুর করে। এর প্রতিবাদে ও সিএনজি চালিত অটো রিকসা চলাচল বন্ধ করার দাবীতে শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন অপুর হস্তক্ষেপে তিন ঘন্টা পর বেলা তিনটার দিকে বাস চলাচল শুরু করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শরীয়তপুর পৌর শহরের ব্যবসায়ী রুবেল খান শহরের কোট সংলগ্ন সদর রোডে একটি সিএনজি চালিত অটো রিকসার বিক্রয় কেন্দ্র চালু করেন। সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ওই বিক্রয় কেন্দ্রটি উদ্বোধনের কথা ছিল স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন অপুর। উদ্বোধনের আগেই বাস শ্রমিকরা ওই বিক্রয় কেন্দ্রে হামলা চালায়। বিক্রয় কেন্দ্রে থাকা ৮টি সিএনজি চালিত অটো রিকসা ভাংচুর করে হামলাকারীরা। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ডিবিসির সাংবাদিক বিএম ইশ্রাফিল সহ ৫ জন আহত হয়। এ সময় আতঙ্কে কোর্ট বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট বন্ধ করে দেন। আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে ওই স্থানে ছুটে যান স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু। তিনি এ ঘটনার বিচারের আশ^াস দিয়ে ব্যবসায়ীদের দোকান খোলা রাখার আহবান জানান।
এদিকে সিএনজি চালিত অটো রিকশা চলাচল বন্ধ করার দাবীতে বাস শ্রমিকরা সড়কের উপর বাস ফেলে রেখে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু পৌর বাস টার্মিনালে গিয়ে সেখানে বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক নেতাদের সাথে কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) কামরুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভির হায়দার ও পালং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবীর। সাংসদ ইকবাল হোসেন অপুর হস্তক্ষেপে বেলা ৩টার দিকে বাস চলাচল শুরু হয়।
ব্যবসায়ী রুবেল খান বলেন, আমি বৈধভাবে সিএনজি চালিত অটো রিকসার ব্যবসা শুরু করেছি। আজকে আমার শো-রুম উদ্বোধন করার কথা ছিল আমাদের নেতা সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু ভাইর। বাস মালিকদের ইন্ধনে বাস শ্রমিকরা আমার শো-রুমে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। তারা আমার আটটি সিএনজি অটো রিকসা ভাংচুর করেছে। আমার বিক্রয় কর্মি ও সিএনজি চালকদের মারধর করে আহত করেছে। এতে আমার অন্তত ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ডিবিসি টেলিভিশনের শরীয়তপুর প্রতিনিধি বিএম ইশ্রাফিল বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা সিএনজি চালিত অটোরিক্সার শো-রুম ভাংচুর করছিল। আমি ওই ঘটনার ভিডিও ধারন করতে গেলে শ্রমিকরা আমার ক্যামেরা ভাংচুর ও আমাকে পিটিয়ে আহত করেছে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার বলেন, শরীয়তপুরে আটো রিকসা ও ছোট গাড়ির জন্য পরিবহন ব্যবসা লোকসান হচ্ছে। আমরা মহাসড়কে অটো রিকসা বন্ধ করার জন্য অনেক বার স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গিয়েছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। শহরে আরো একটি সিএনজি চালিত অটো রিকসার শো-রুম চালু করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিল। তারা শো-রুম বন্ধ করে দিতে গিয়েছিল।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান বলেন, ভাংচুরের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু দু’পক্ষের সাথে কথা বলেছেন। দু’পক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।