আজ শনিবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

কুরবানির উপলক্ষে ব্যাস্ত সময় পার করছেন নড়িয়ার কামার শিল্পীরা

মিনহাজুর রহমান সানমুন: পবিত্র ইদুল আযহা সামনে রেখে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। আর ২ দিন পরেই মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ইদুল আযহা, করবানী ইদ। এই ঈদের অন্যতম কাজ হচ্ছে পশু কুরবানি করা। ঈদ-উল আযহাকে সামনে রেখে কুরবানির পশু জবাইয়ের জন্য, মাংস কাটার জন্য বিভিন্ন ধাপে ছুরি, দা, চাপাতি এসব ব্যবহার করা হয়। আর এসব সরঞ্জাম প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শরীয়তপুরের নড়িয়ার কামার শিল্পের কারিগররা। আজ রবিবার নড়িয়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। টুংটাং শব্দই বলছে ঈদ লেগেছে কামার পাড়ায়। দিন রাত চলছে চাপাতি, দা, বটি, ছুরি তৈরি ও শানের কাজ। নাওয়া খাওয়া ভুলে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। বছরে তো একটাই সময় কটা দিন মাত্র ব্যস্ত, কুরবানি ঈদের পর তো আর তেমন কোন কাজ থাকে না। তাইতো এই সময়টাকে বেশ উপভোগ করে কামার শিল্পীরা। ঘরিসার বাজারের কামার বলেন অভি দত্ত বলেন, সারা বছর এই কোনবানির ঈদের (ঈদুল আযাহা) জন্য অপেক্ষায় থাকি আমরা।এসময়টিতে যারা কোরবানির পশু জবাই করেন তারা প্রত্যেকে চাপাতি, দা, বটি, ছুরি তৈরি করেন। সারা বছরের তুলনায় এই সময়টিতে কাজ বেশি হওয়ার কারনে লাভও বেশি হয়। কামার শিল্পিদের কাছে চাপাতি ও দা শান দিতে এসে সবুজ মাহমুদ জয় বলেন, ৩ঘন্টা যাবত অপেক্ষা করতেছি কিন্তু এখনো শান দিতে পারি নাই, ঈদ উপলক্ষে অনেক চাহিদা থাকায় কামারদের ব্যাস্ততাও অনেক বেশি। কদমতলা এলাকার রুহুলআমিন চাপাতি শান দিতে এসেছেন, তিনি বলেন, দীর্ঘ ১বছর ধরে ঘরে রখে দেওয়ায় কিছুটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তাই শান দিতে নিয়ে এসেছি । দেশি চাপাতিগুলো কেজি হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ওজনের চাপাতির দাম ৬০০টাকা। লোহার তৈরি ছোট ছুরি ৬০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জবাই ছুরি মিলছে ৫০০-৬০০ টাকায়। বটি দা বিক্রি হচ্ছে ৩০০টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানান, সারাবছর বেচাকেনা কিছুটা কম থাকে। কোনোরকম দিন যায়। এই সময়ের জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকি। কুরবানির ঈদের আগে এক সপ্তাহ ভালো বেচাকেনা হয়। ওই সময় দামও ভালো পাওয়া যায়। অপর দিকে ঐতিহ্যবাহী মূলফৎগঞ্জ বাজারের কামার বেপারী তিনি ৪৫বছর ধরে এই কাজ করেন, তিনি বলেন গতবছর পদ্মার ভাঙ্গনের কারনে মূলফৎগঞ্জ বাজারের বেচাকেনা আগের মত নেই। নড়িয়া বাজার, মূলফৎগঞ্জ বাজার, ঘরিসার বাজার, ভোজেশ্বর বাজার সহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন কামারের দোকানে গ্রাহকের আনাগোনা এখন বেড়েছে। কামাররাও দা, বটি, ছুরি, শান দিতে ব্যস্ত। দোকানের সামনে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছেন নতুন দা, ছুরি, বটি। মানভেদে চাপাতি শান দিতে ১০০ থেকে ১৫০টাকা, বটি দা ৮০টাকা, ছুড়ি ৩০ থেকে ৭০টাকা শান দিতে নেওয়া হচ্ছে। গোশত কাটার জন্য কাঠের গুড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০০-৫০০টাকায়, আর হোগলা বিক্রি হচ্ছে ৮০-১২০টাকায়