আজ বুধবার, ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শেষ মুহূর্তে জমজমাট নড়িয়ার কুরবানির পশুর হাট

মিনহাজুর রহমান সানমুন: ঈদুল আজহা উপলক্ষে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার হাটগুলোতে কুরবানির পশুর প্রাচুর্যতা রয়েছে। গতবারের চেয়ে দাম একটু বেশি বলেছেন ক্রেতারা, অপরদিকে খামারিরা বলছে, খৈল-ভুষিসহ খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরু-লালন পালনে ব্যয় বেশি হওয়ায় দাম এবার বেশি। তবে সেই দামে গরু বিক্রি করতে পারছে না। তবে খামারিদের আশঙ্কা, যদি ভারতীয় গরু অবৈধ পথে দেশে প্রবেশ করে তবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর এ জন্য সরকারকে কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষক-খামারিরা।

এবারের ঈদের হাট গুলোতে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা থাকলেও দাম ভালো নেই বড় গরুর। এ বছর গরু-ছাগলের দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু ক্রেতা সমাগম কিছুটা কম রয়েছে বলেছেন ব্যাবসায়িরা, গরুর যথেষ্ট উচ্চ মূল্য না পাওয়াতে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।
অন্যদিকে ক্রেতাদের সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে ধর্মীয় কাজটি সম্পন্ন করতে পশু কিনছেন মানুষ। তাই বিক্রিও কম নয়। ।

এদিকে কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন জাতের গরু-ছাগলের ব্যাপক সমাগম ঘটেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য নড়িয়া থানা পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি হাট ইজারাদার তার নিজস্ব লোকজন প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে চন্ডিপুর বাজার হাট, ঘড়িসার বাজার হাট, পন্ডিসার হাই স্কুল মাঠ, কদমতলা বাজার হাট, চাকধ বাজার, গৌরঙ্গ বাজার হাট, নড়িয়া বাজার হাট, ভোজেশ্বর বাজার হাট ঘুরে দেখা যায় হাটে ছোট-বড় প্রচুর পরিমাণ কুরবানির গরু উঠেছ। তবে এবার হাটে ছাগলের সংখ্যা কম। হাটে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়েছে দেশী গরু।

গরু বিক্রি করতে আসা রুবেল মাদবর বলেন, আমি আমার গরুর দাম ১লক্ষ ১০হাজার টাকা চেয়েছি, কিন্তু ক্রেতা ৮০হাজার টাকা বলেছে।

শরীয়তপুর থেকে চাকধ বাজার হাটে গরু বিক্রি করতে আসেন সুলাইমান হাওলাদার, তিনি বলেন, বর্তমানে গরুর খাবারের যেই দাম সেই অনুপাতের দামে গরু বিক্রি করতে পারছি না, এভাবে তো আমাদের লস হয়ে যাবে।

জেলার অন্যান্য গরুর হাট গুলোতে এবার বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশি গরু আসছে। প্রচুর গরু ছাগলের আমদানী হওয়ায় নির্দিষ্ট এলাকা ছেড়ে হাট বসছে। হাটে বেচাকেনা মুটামুটি ভাবে জমে উঠেছে।

কলুকাঠি গ্রামের আঃ রব গরু কিনতে এসে বলেন গরুর দাম গতবারের তুলনায় অনেক বেশি। তাই একটু জেনেই গরু কিনবো।

হাটে ৩০ থেকে শুরু করে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাম চাইছেন বিক্রেতারা তবে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার গরু ও ২৫ হাজার টাকার ছাগল বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া ৪০-৪৫ এবং ৬৫-৮০ থেকে হাজার টাকা মূল্যের গরু বেশি বিক্রি হয়েছে বলেও জানা গেছে। ৭৫-৮৫ হাজার টাকা মূল্যের গরু বেশ কিছু বিক্রি হয়েছে। ছাগল ও ভেরা বিক্রি হয়েছে অনেক বেশি। দাম ৭ হাজার টাকা থেকে ২৫হাজার টাকার মধ্যে। তবে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা মূল্যের ছাগল বিক্রি হয়েছে

নড়িয়া বাজার হাটে গরু কিনতে এসে মোঃ নাসির শিকারী বলেন, আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় গরু কুরবানি দিবো, তাই সাধ্যের দামে গরু পেলেই কিনে নিবো।

হাটে পোশাক পরিহিত পুলিশের মাধ্যমে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জালনোট শনাক্তের জন্য মেশিন বসানো হয়েছে। হাটে ক্রেতারা কোন দালালের মাধ্যমে নয়, সরাসরি কৃষক ও খামারিদের কাছ থেকে তাদের চাহিদা মোতাবেক কুরবানির পশু কিনছেন। তবে এখনো হাটে ভারতীয় গরু না ওঠায় বিক্রেতারা অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছেন। পশুর হাট গুলির কর্তপক্ষের পক্ষ থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

নড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম মনজুরুল হক আকন্দ জানান, কুরবানীর পশুর হাটগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাটে ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টি ও দালাল মুক্ত করার জন্য পোশাকধারী পুলিশসহ গোয়েন্দার মাধ্যামে থানা এলাকায় প্রতিটি পশুর হাটে ব্যাপক নিরাপত্ত জোরদার করা হয়েছে। জালনোট শনাক্তের জন্য মেশিন বসানো হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।