আজ মঙ্গলবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শরীয়তপুরে পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা নারী আটক

শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে এসে এক রোহিঙ্গা নারী আটক হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে পাসপোর্ট ফরম জমা দেয়ার সময় জমা কাউন্টার থেকে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত নারীর ছদ্যনাম শাহিদা আক্তার। শাহিদা মিয়ানমারে সুখতারা নামে পরিচিত। তিনি জাজিরা উপজেলার পালেরচর (মহন ফকিরের কান্দি) গ্রামের বাবুল ফকিরের স্ত্রী পরিচয়ে পাসপোর্ট করতে আসেন। গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই ও এনএসআই আটককৃত নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ পালং মডেল থানায় সোপর্দ করেছেন।
শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্র জানায়, ৬ নভেম্বর বুধবার বেলা ১১টার দিকে বাবুল ফকির ও তার স্ত্রী পরিচয়ে শাহিদা আক্তার দুটি পাসপোর্টের পরিপূর্ণ ফরম নিয়ে ফরম জমা কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়ায়। প্রথমে শাহিদার স্বামী পরিচয়ে বাবুল ফকির ফরম জমা করে। পরবর্তীতে শাহিদা ফরম জমা দেয়। ফরম জমা কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা সহকারী হিসাবরক্ষক সালে আহমেদ শাহিদার জবানবন্দি গ্রহনকালে স্বামী ও গ্রামের নাম ছাড়া বাংলায় অন্যকিছু বলতে পারে নাই। পরে শাহিদাকে আটক করা হয়। এ সময় শাহিদার স্বামী বাবুল ফকির পালিয়ে যায়।
শাহিদা কর্তৃক পূরণকৃত পাসপোর্ট ফরম থেকে প্রতিয়মান হয়, সে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালের চর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদ ও পরিচয়পত্র নিয়েছেন। পালের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান নিবন্ধক হিসেবে শাহিদার জন্ম সনদ ও পরিচয়পত্রের নিচে নিবন্ধকের নাম সহ সীল মোহর সহ স্বাক্ষর করেছেন। পাসপোর্ট ফরম ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সত্যায়ন করেছেন পূর্বনাওডোবা আইডিয়াল কিন্ডার গার্টেন এন্ড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাহাদ হোসেন সৌম্য।
আটকৃত রোহিঙ্গা নারী জানায়, বাবুল ফকিরের সাথে তার চট্টগ্রামে দেখা হয়। সে ওই নারীকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে শরীয়তপুর নিয়ে আসে। সকল কাগজপত্র বাবুল ফকির প্রস্তুত করে এবং তার স্ত্রী পরিচয়ে তাকে পাসপোর্ট করার জন্য পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে আসে।
জেলা গোয়েন্দা শাখার এনএসআই (ফিল্ড অফিসার) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি পাসপোর্টের উপ-সহকারী পরিচালক শেখ মাহাবুর রহমানকে জানাই। ঐ আলোকে শেখ মাহাবুর রহমান গুরুত্বের সাথে কাগজপত্র ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাচাইকারী অফিসার সহকারী হিসাবরক্ষক সালেহ আহাম্মেদকে দায়িত্ব দেন। এরপর যাচাইকারী অফিসার সালেহ আহাম্মেদের নানান জিজ্ঞাসাবাদে রোহিঙ্গা কন্যা ধরা পড়ে যায়।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক শেখ মাহাবুর রহমান বলেন, এক নারী পাসপোর্ট করার জন্য অফিসে এসে ফরম জমা করে। তার আচরণ ও গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল। সে শিখানো কয়েকটি বাংলা ভাষা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেনি। পরে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তার সাথে থাকা স্বামী পরিচয়ে বাবুল ফকির নামে এক ব্যক্তি পালিয়ে যায়। এক পর্যায় ওই নারী রোহিঙ্গা নাগরিক বলে স্বীকার করে। আটককৃত নারীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
পালং মডেল থানা উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম বলেন, পাসপোর্ট করতে এসে পাসপোর্ট অফিসে এক রোহিঙ্গা নারী আটক হয়। পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। আটকৃত রোহিঙ্গা নারীর বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।