
শরীয়তপুরের বাজার গুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতার প্রশ্নের জবাব দিতে খুচরা বিক্রেতা হিমসিম খাচ্ছে। লাগামহীন ভাবে বেড়েছে পেঁয়াজ রসুন ও আদার দাম। শীতকালীন শাক সব্জির মধ্যে ফুল কফি, সীম ও টমেটো বাজার দর উর্ধ্বমূখী। শশা ও গাজর সহ যে সকল পণ্য সারা বছর চাহিদা পূরণ করে তাও রেকর্ড ছাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে।
শরীয়তপুরের বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা নিয়মিত খুরচা দোকানীর উপর অসন্তোষ হচ্ছে। তাদের অভিযোগ খুচরা দোকানীরা অল্প দরে পণ্য ক্রয় করে বেশী দরে বিক্রি করছে। দোকানীর দাবী বেশী দামে পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে তারা হয়রানী হচ্ছে।
সোমবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে। প্রতি কেজি রসুন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, আদা প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। প্রতিকেজি টমেটো, গাজর ও শশা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। বাঁধা কফি ও বেগুন ৫০ টাকা, ফুল কফি ও সীম ৭০ টাকা দরে। বেগুনও বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। এক কথায় বাজারে ৫০ টাকার কমে কোন শাক সব্জি মিলছে না।
বাড়িতে নতুন মেহমান রেখে বাজারে এসেছেন আটং এলাকার কামাল বেপারী। সাধ্যমত টাকাও পকেটে নিয়ে এসেছে ভালো কিছু কেনার জন্য। বাজারে এসে কী অভিজ্ঞতা হয়েছে তার এবার তিনি জানাবেন। তিনি পালং বাজারে এসে মাছ-গোস্তের বাজারে প্রবেশ পথে কাঁচা মালামালের তালিকা বের করেন। ১ কেজি করে পেঁয়াজ, টমেটো, শশা, গাজর ও আঁধা কেজি করে আদা এবং রসুন দেয়ার জন্য দোকানিকে বলেন। সাথে ভোজ্য তেল ২ লিটার ও কিছু মসলাও দিতে বলেন। দোকানি সকল পণ্য সরবরাহ করে যে মূল্য দাবী করে তাতে কামালের পকেট প্রায় খালি হয়ে যায়। পরবর্তীতে পরিচিত এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে মাছ গোস্ত সহ অন্যান্য পণ্য কিনে বাড়ি ফিরেন। এক পর্যায় কামাল বলেন, বাজারের যে অবস্থা মনে হচ্ছে বস্তা ভরে টাকা এনে ব্যাগে ভরে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নিতে হবে।
এমনি ভাবে অনেক ক্রেতা খুচরা দোকানিকে চোর-ডাকাত বলে গালি দিয়ে থাকেন। অনেকে বিভিন্ন বাজারকে ঠাডার বাজার হিসেবে অবিহিত করেছেন।
পালং ডাক বাংলো এলাকার এক ব্যবসায়ীর সাথে কথা হয়। পণ্যের উচ্চ মূল্য সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানায়, আমরা পারি এখন দোকান বন্ধ করে বসে থাকতে। এখন পেঁয়াজের দাম বেশী। আগের তুলনায় পেঁয়াজ বিক্রি ৮০ শতাংশ কমে গেছে। আগে একজন ক্রেতা ৫ কেজি পেঁয়াজ নিলে আমরা ২০ থেকে ২৫ টাকা মুনাফা পেতাম। এখন একজন ক্রেতা পেঁয়াজ চায় ১০০ গ্রাম। সেখানে কত টাকা ব্যবসা করব। ১ সপ্তাহ পূর্বে প্রতিকেজি ফুল কফি ৩০ টাকা কিনে ৩৫ টাকায় বিক্রি করতাম। ১ সপ্তাহের ব্যবধানে ফুল কফির পাইকারী মূল্য প্রতিকেজি ৬৫ টাকা। খুচরা বিক্রি ৭০ টাকা। এখন বিক্রি মূল্য বেশী কিন্তু সেই তুলনায় মুনাফা কম। ক্রেতার সাথে জবাবদিহিতা করতে হয় অনেক বেশী। আংগারিয়া বাজারে দুই জন পাইকারী ব্যবসায়ীর কাছে যে পরিমান পেঁয়াজ মজুদ আছে তা দিয়ে সারা শরীয়তপুর এক সপ্তাহ চলতে পারে। অথচ দাম ছাড়ছে না। এখন আমরা কি করব?