আজ রবিবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

জাজিরা পদ্মা সেতুতে বসলো ১৭ তম স্প্যান

দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে বসলো পদ্মা সেতুর ১৭ তম স্প্যান (৪ডি)। জাজিরা প্রান্তের মাদারীপুর এলাকায় মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটের সময় ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারের উপর বসানো হয় স্প্যানটি।
স্প্যানটি বর্ষার আগে মাওয়া কুমারভোগ কনেস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে এনে জাজিরা প্রান্তের ২৭ ও ২৮ নম্বর পিলারের কাছে বিশেষ কাঠামোর ওপর রাখা হয়েছিল। পরে বিশাল আকৃতির ক্রেন দিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে স্প্যানটি ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারের কাছে নিয়ে আসা হয়। পরে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে পিলারের ওপর ওঠানোর কাজ শুরু হয়। ১ টা ৪০ মিনিটের সময় স্প্যানটি পিলারের ওপর তোলার কাজ শেষ হয়।
স্প্যানটি বসানোর ফলে দৃশ্যমান হল ২ হাজার ৫৫০ মিটার। অর্থাৎ আড়াই কিলোমিটারের বেশি। জানিয়েছেন পদ্মা মূল সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি ও সেতু কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ন কবীর জানান, ২২ ও ২৩ নম্বর খুঁটিতে বসছে এই স্প্যানটি। এই স্প্যান বসানো হলে সেতুর ২ হাজার ৫৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে। এরপরই ৪ অথবা ৫ ডিসেম্বর বসার কথা রয়েছে ১৮ তম স্প্যান ১৭ ও ১৮ নম্বর খুঁটিতে। এখন থেকে অল্প সময়ের ব্যবধানে স্প্যান উঠতে থাকবে।
ইতিমধ্যে চীন থেকে আরো দুটি স্প্যান বাংলাদেশে পৌঁছেছে। সমুদ্র পথে গত ১৯ নভেম্বর বিকালে স্প্যান দুটি মংলা পোর্টে এসে পৌঁছায়। এর আগে গত ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১ টার দিকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে ১৬ তম স্প্যান (৩ডি) ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। ওই স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে সে সময় সেতুর দৃশ্যমান হয় ২৪০০ মিটার। স্প্যান বসার পরে কাজের গতি বেড়েছে।
প্রকৌশলী জানান, সব চ্যালেঞ্জ জয় করে এগিয়ে যাচ্ছে মূল সেতুর কাজ। পিলারের পাশাপাশি, স্প্যান, রোডওয়ে ও রেলওয়ের কাজও এগিয়ে চলছে। পুরো সেতুতে ২
হাজার ৯৩১ টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯ টি। ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুতে প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।
এর আগে ১৬ তম স্প্যান বসানোর প্রস্তুতি নেয়ার পরও ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সরিয়ে নিতে হয় সব যন্ত্রপাতি। ১৬ টি স্প্যান নদীতে বসানো আছে। চীন থেকে দেশে এসে পৌঁছেছে আর ও ১৭ টি স্প্যান, এর মধ্যে বসানোর জন্য পুরো প্রস্তুত আছে ৫ টি। সেতুর ৪২ টি পিলারের মধ্যে পুরো প্রস্তুত এখন ৩৩ টি। ৪২ টি পিলারের উপর ৪১ টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার।