আজ বুধবার, ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শরীয়তপুর সদরে কীর্তিনাশার ভাঙনে অর্ধশতাধিক বাড়ি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা

গভীর রাত। সবাই ঘুমিয়ে। হঠাৎ গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কীর্তিনাশা নদীর পাড়ে বিকট শব্দ। ভাঙতে থাকে নদীর পাড়। বুধবার (২৪ জুন) সকাল না হতেই প্রায় দুইশ মিটার এলাকা বিলীন।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের চর স্বর্ণঘোষ কীর্তিনাশা নদীতে হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় গ্রামটির অর্ধশতাধিক বাড়ি বিলীনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) থেকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চরস্বর্ণঘোষ গ্রামে কীর্তিনাশা নদীতে হঠাৎ এ ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা। তারা ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

চর স্বর্ণঘোষ গ্রামের পাঁচ-সাতজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষার পানিতে গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া কীর্তিনাশা ছিল টইটম্বুর। গত বৃহস্পতিবার থেকে নদীতে পানি বাড়তে থাকে। এরপর নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করে।

বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, নদী বেশ শান্ত। ঢেউ নেই, তবে রয়েছে স্রোত। আর স্রোতের সঙ্গে ভাঙছে পাড়, জমি ও বসতবাড়ি।

তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ফকির জানান, চর স্বর্ণঘোষ নদীর দুই পাড়ের ছোট্ট গ্রামটিতে প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষের বসবাস। অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। তাদের প্রচুর গরু-ছাগল রয়েছে। অনেকে জমি, বাড়িঘর হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

ভাঙনের বিষয়টি শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা ইউএনও ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

গ্রামের আবু তালেব সরদার বলেন, প্রায় চার বছর যাবত ভাঙছে। চার বছরে আমাদের ১৩৬ শতাংশ ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। এ বছরও ভাঙন শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে বেশি ভাঙছে। ভাঙন রোধ না হলে আমাদের বাড়িঘরও নদীতে চলে যাবে।

মো. খোকন সরদার বলেন, যাদের বাড়ি ভেঙেছে, তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে। ভাঙন না ঠেকালে পুরো গ্রামের মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাবে। তাই সরকারের কাছে আমরা ভাঙন রোধের দাবি জানাই।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, নদী পাড় ভাঙার বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে সহযোগিতা করা হবে। তাছাড়া অন্য কোনো সুবিধা দেয়া যায় কি না দেখছি।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবীব বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভাঙন কবলিত এলাকায় দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যাতে করে কোনো এলাকা নদীগর্ভে বিলীন না হয়।