
শরীয়তপুরে কলেজ ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ এবং অশ্লীল ছবি ও নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করার অভিযোগে মো. বেলাল হোসেন মাদবরকে (২৬) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের একটি বিশেষ আভিযানিক দল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শরীয়তপুরের জাজিরা থানাধীন কাজীকান্দি গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
শুক্রবার রাতে র্যাব-৮, সিপিসি-৩, মাদারীপুর ক্যাম্পের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। বেলাল শরীয়তপুর জেলার পালং থানার কাশাভোগ এলাকার মৃত সেকেন্দার আলী মাদবরের ছেলে।
ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে র্যাব জানায়, স্থানীয় একটি সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শেষ বর্ষের ওই ছাত্রী জাজিরা মর্ডাণ ক্লিনিকে রিসিপশনিস্ট পদে চাকরি করে। ভিকটিম আনুমানিক ১০ মাস পূর্বে শরীয়তপুর কলেজে যাওয়ার পথে অভিযুক্ত মো. বেলাল হোসেন সরদারের সাথে পরিচয় হয়। ভিকটিমকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিএমএইচে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। উক্ত সম্পর্কের জের ধরে গত ২১ জুন আনুমানিক দুপুর ২টায় অভিযুক্ত ভিকটিমের সঙ্গে চাকরির বিষয়ে আলাপ করার জন্য ফুসলিয়ে মাদারীপুর জেলা শহরের আবাসিক মোটেল মতির ১২৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়।
সেখানে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে এবং অভিযুক্ত বেলাল তার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ধর্ষণের দৃশ্য, অশ্লীল ছবি ও নগ্ন ভিডিও ধারণ করে এবং দীর্ঘ ৩/৪ ঘন্টা ধরে ভিকটিমকে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। ভিকটিম ধর্ষণের বিষয়ে কাউকে কিছু বললে অথবা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে উক্ত অশ্লীল ছবি ও নগ্ন ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে এবং ভিকটিমকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
র্যাব আরও জানায়, এছাড়াও ভিকটিম কলেজে যাওয়া আসার পথে অভিযুক্ত বেলাল প্রায়ই উক্ত অশ্লীল ছবি ও নগ্ন ভিডিও দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেয় ও অভিযুক্ত ভিকটিমের কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। ভিকটিম অভিযুক্তের কুপ্রস্তাব এবং দাবিকৃত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্ত ভিকটিমের অশ্লীল ছবি ও গোপনে মোবাইলে ধারণকৃত নগ্ন ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পেতে ভিকটিম গত ৮ জুলাই র্যাবের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৮, সিপিসি-৩, মাদারীপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি বিশেষ আভিযানিক দল জাজিরা থানার কাজিকান্দি জনৈক শাহজাহান আকনের বাসার সামানে থেকে অভিযুক্ত বেলালকে আটক করে।
উল্লেখ্য, ঘটনাস্থল মাদারীপুর সদর থানায় হওয়ায় আটককৃত আসামিকে মাদারীপুর জেলার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে মাদারীপুর জেলার সদর থানায় ধর্ষণ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।