
পৌরসভা নির্বাচনে এবার ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে না। গত নির্বাচনে যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ভোট করে বিজয়ী হয়েছেন তাদেরও সুযোগ দেয়া হবে না।
এছাড়া কেউ দলীয় মনোনয়ন ছাড়াই নির্বাচন করলে তাকে আসন্ন ভোটের আগে বা পরে কোনো পর্যায়েই সমর্থন দেয়া হবে না। উল্টো তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা হয়।
এদিনের সভায় ২৫ পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে নয়জন বর্তমান মেয়র এবার দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন।
তাদের মধ্যে দু’জন গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন। এবারও তারা দলের মনোনয়ন পাননি। এ ৯ পৌরসভায় নতুন মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
তবে ১৪ জন বর্তমান মেয়রকে আবারও দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। বাকি দুটি পৌরসভার মধ্যে একটিতে বর্তমানে বিএনপির মেয়র রয়েছেন। অন্যদিকে যিনি মেয়র, তিনি স্বতন্ত্র মেয়র।
এ দুটিতেও দলের নেতাদের প্রার্থী করা হয়েছে। এর আগে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দল তেমন কঠোর অবস্থান নেয়নি। কিন্তু এবার শুরু থেকে এ ধরনের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন দলের হাইকমান্ড।
বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নামের তালিকা এবং সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলা/পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত রেজুলেশনে প্রস্তাবিত প্রার্থীর নামের তালিকা ধরে আলোচনা হয়।
এ সময় বিগত নির্বাচনে যারা দলের প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করেছিলেন, তাদের কাউকে এবার নতুন করে মনোনয়ন না দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানায়, সভায় বিগত নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করে বড় ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিলেন, এমন এক প্রার্থীর নাম আলোচনায় আসে।
তখন একাধিক নেতা বলেন, অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ধরে রাখতে যারা দলের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করেছেন, তারা ‘জনপ্রিয়’ হলেও এবার তাদের মনোনয়ন দেয়া যাবে না। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা এতে সম্মতি দেন।
এছাড়া সভায় প্রথম ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিজয়ী করার নির্দেশ দেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, যারা অতীতে পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাদের পরিবর্তন করে সাংগঠনিক রিপোর্টের ভিত্তিতে তুলনামূলকভাবে পরিচ্ছন্ন ও জনপ্রিয় ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
এই সতর্কবাণীর মধ্যে যদি আসন্ন নির্বাচনে কেউ দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করে তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক রীতি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে সভায় অনির্ধারিত আলোচনায় করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েবের প্রসঙ্গও উঠে আসে। সভায় শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, কোভিডের দ্বিতীয় ওয়েভেও অতীতের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে।
তিনি বলেন, নিজে সতর্ক থেকে অন্যকে সতর্ক করে তুলতে হবে। পাশাপাশি কোভিড ইস্যুতে কেউ যেন জনমনে ভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২৫ পৌর নির্বাচেন আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত তালিকা দেয়া হয়।