
শরীয়তপুর ট্রাফিক পুলিশের টাউন সাব-ইন্সপেক্টর এক মোটরসাইকেল চালককে ৫ হাজার টাকার মামলা দেন। ৫ হাজার টাকার মামলা দেওয়ায় ওই মোটরসাইকেল চালক অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান বলে স্থানীয়রা জানান।
সোমবার বিকালে শরীয়তপুর পৌরসভার মনোহর বাজার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ছে। পুরো জেলায় আলোচনা-সমালোচনা হয়।
মোটরসাইকেল চালকের নাম মো. নেছার উদ্দিন জমাদ্দার। তিনি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার মাছুয়াকান্দি গ্রামের আব্দুল লতিফ জমাদ্দারের ছেলে। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মোটরসাইকেল চালক নেছার উদ্দিন সোমবার বিকালে শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে গোসাইরহাটের দিকে যাচ্ছিলেন। তার মোটরসাইকেলে তাকে নিয়ে ৩ জন যাত্রী থাকায় শরীয়তপুর পৌরসভার মনোহর বাজার মোড় এলাকায় তাকে দাঁড় করান টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (টিএসআই) ফজলুল করিম। দেখতে চান সব ধরনের কাগজপত্র। তবে সব কাগজপত্র ঠিক থাকলেও ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল। তাই টিএসআই ফজলুল করিম ওই মোটরসাইকেল চালককে ট্রাফিক আইনে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এ সময় জরিমানার টাকার অংক দেখে নেছার উদ্দিন অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে নেছার উদ্দিনের সঙ্গে থাকা দুই যাত্রী তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নেছার উদ্দিন বাড়িতে চলে যান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে জেলাজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে।
মোটরসাইকেল চালক মো. নেছার উদ্দিন বলেন, আমি দুইজন যাত্রী নিয়ে শরীয়তপুর শহর থেকে গোসাইরহাটের দিকে যাচ্ছিলাম। যখন মনোহর বাজার মোড়ে যাই তখন ট্রাফিক স্যার আমাকে দাঁড় করান। আমি স্যারকে বলছিলাম যে, আমি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাই। তবুও তিনি সবধরনের কাগজপত্র দেখতে চান। আমি দেখাইও, কিন্তু ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ চলে গেছে এটা জানতাম না। আমি তাকে অনেক অনুরোধ করি কিন্তু তিনি তা মানেন না। তবুও তিনি আমাকে ৫ হাজার টাকার মামলা দেন। ভাড়ায় গাড়ি চালাই, গরিব মানুষ। এত টাকা কোথা থেকে দেব, এ চিন্তায় অজ্ঞান হয়ে যাই। তবে স্যার বলেছেন, টাকা কমিয়ে দেবেন।
এ ব্যাপারে টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (টিএসআই) ফজলুল করিম বলেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে মনোহর বাজার মোড়ে দায়িত্ব পালন করছিলাম। হঠাৎ করেই তিনজন একসঙ্গে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। আমি তাদের দাঁড় করাই এবং কাগজপত্র দেখতে চাই। সব কাগজপত্র দেখার পরে তার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করি। জরিমানার অঙ্ক দেখেই মাথা ঘুরে হঠাৎ করে পড়ে যান তিনি। আমরা তার আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে জরিমানা কমিয়ে দেওয়ার বিষয়টি দেখব।
শরীয়তপুর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. আবু সাঈদ বলেন, ব্যাপারটা আমি শুনেছি। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, আমাদের লোকজনসহ তার মাথায় পানি ঢালে। পরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি এখন সুস্থ আছেন। টাকা কমানোর এখতিয়া আমাদের নেই। এটা এসপি সাহেবের কাছে।