
ইলিয়াছ মাহমুদ, শরীয়তপুর নিউজ ॥ নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং গ্রামবাংলার লোকজ সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে নারী জাগরণ ও পল্লী উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এমন কয়েকজন বাংলাদেশি নারীদের প্রতি বছর রোকেয়া পদকে ভূষিত করা হয়। চলতি বছরে নারী জাগরণ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজ মাজেদা শওকত আলী’র সহ আরও পাঁচ মহয়সী নারীদের হাতে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকালে বেগম রোকেয়া দিবস-২০১৭ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পদক তুলে দেন।
মিস মাজেদা শওকত আলী সাবেক ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অবঃ) শওকত আলীর স্ত্রী এবং মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি যুদ্ধোত্তর স্বাধীন বাংলাদেশের মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার পদ অনুস্মরণ করে নারী জাগরণে অনবদ্য ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। তিনি নারী শিক্ষা, নারী অধিকার ও নারী জাগরণ সম্পর্কিত বিভিন্ন সংগঠণের সঙ্গে জড়িত আছেন। বেসরকারী সংগঠণ ‘নড়িয়া উন্নয়ন সমিতি (নুসা)’ এর নির্বাহী পরিচালক হিসাবে প্রায় বত্রিশ হাজার নারীর আর্থ-সামাজিক ও নারী অধিকার বাস্তবায়নে অবদান রাখছেন। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে তার কাজের মাধ্যমে নারী মর্যাদা, বাল্য বিবাহরোধ, নারী নির্যাতনরোধ, আইনি সহায়তা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃস্টিতে নিরলসভাবে অবদান রেখে যাচ্ছেন এবং ইতিমধ্যে এরুপ কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি অনেক সম্মননা পেয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাকে এ পদক প্রদান করা হলো।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতি বছর বেগম রোকেয়া দিবসে এই পদক বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪০ জন নারীকে এ পদক দেয়া হয়েছে। বেগম রোকেয়া পদক নারী জাগরণের ক্ষেত্রে বেগম রোকেয়ার অবিস্মরণীয় অবদান স্বীকৃতি উল্লেখ করে বাংলাদেশ সরকারের একটি রাষ্ট্রীয় পদক। প্রতি বছর ডিসেম্বরের ৯ তারিখ বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে সরকারিভাবে এই পদক প্রদান করা হয়। নারী কল্যাণ সংস্থা ১৯৯১ সাল থেকে এই নামের একটি পদক প্রদান করা শুরু করে। সরকারিভাবে ১৯৯৬ সাল থেকে এই পদক প্রদান করা হয়।
এ বছরে বেগম রোকেয়া পুরস্কার প্রাপ্ত অন্যান্য নারীরা হলেন শিক্ষক শোভা রাণী ত্রিপুরা, গ্রাম বিকাশ সহায়তা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রত্না, চিকিৎসক ব্রি.জে (অব) সুরাইয়া রহমান এবং সাংবাদিক মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদ (মরোণত্তর)।