আজ রবিবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ধর্ষনে ব্যার্থ হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় ধর্ষনে ব্যার্থ হয়ে ঝর্ণা আক্তার (২৭) নামে এক ক্লিনিকের আয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুই যুবক। ওই নারী উপজেলার লাউখোলা বাজার সিরাজ খান ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আয়ার চাকরি করতেন। ৫ জানুয়ারী সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শরীয়তপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য দেন পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন।

প্রেস ব্রিফিং থেকে জানা যায়, শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলার আড়াচন্ডি (সাবেক কাজিয়ারচর ভূইয়াকান্দি) গ্রামের মৃত নুরু মুন্সীর মেয়ে ঝর্ণা আক্তার গত ২০১০ সালে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার আট নাম্বার গ্রামের জীবন বেপারীর সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। তাদের সংসার জীবন সুখেই কাটছিল। সাত বছরের সংসার জীবনে তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। হঠাৎ করে গত জুলাই মাসে জীবন বেপারী ঝর্ণাকে না জানিয়ে গোপনে আরেকটি বিয়ে করে এবং দুই সন্তানসহ ঝর্ণাকে তার বাবার বাড়ি দিয়ে যায়। ছেলে সন্তানসহ ঝর্ণার কোন খোঁজ খবর না নেয়ায়, সংসার চালাতে জাজিরার লাউখোলা বাজার সিরাজ খান ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে আয়া’র চাকরি নেন ঝর্ণা আক্তার। এর মধ্যেই ক্লিনিকে আসতে যেতে লাউখোলা বাজারের ইলিয়াস মাদবরের কাঠের দোকানের বানিশ মিস্ত্রি ও কাঠের ডিজাইনার সুমন শেখের সাথে প্রথমে পরিচয় ও পরে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে উঠে।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে ঝর্ণা ক্লিনিকে যাওয়ার সময় লাউখোলা আলী জব্বার সিকদারের ধনিয়া ক্ষেতের কাছে পৌঁছলে জাজিরা উপজেলার মানিকনগর শিমুলতলা গ্রামের কলম শেখের ছেলে সুমন শেখ (২৩) ও তার বন্ধু ও সহকর্মী মানিকগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার পূর্ব কামারগাঁও গ্রামের আব্দুল মান্নান মৃধার ছেলে মো. বাবুল মৃধা (২০) মিলে ঝর্ণার পথ রোধ করে কুপ্রস্তাব দেয় । তখন কুয়াশায় চারদিকে ঢাকা ছিল। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ঝর্ণাকে ধনিয়া ক্ষেতে ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা করে সুমন ও বাবুল। তখন ঝর্ণা চিৎকার করলে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। ওই রাতেই ঝর্ণার মা আফিরন বেগম জাজিরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে হত্যাকারী সুমন শেখ ও মো. বাবুল মৃধাকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লাউখোলা এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। সোমবার সকালে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে শরীয়তপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. এহসান শাহ, জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক এনামসহ জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।