
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে ডা. খালেদ শওকত আলীকে চান তৃণমূল আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) নড়িয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ এর বর্ধিত সভা থেকে নেতাকর্মীরা জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসনের তৃনমুল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বর্তমান এমপি কর্নেল (অবঃ) শওকত আলীর ছেলে ডা. খালেদ শওকত আলীর জন্য মনোনয়ন চাওয়া হবে। আর মনোনয়ন পাওয়ার লক্ষে তৃনমুলে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করার জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে প্রায় দুই মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে শনিবার নড়িয়াস্থ নড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে দিনব্যাপী উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুর-২ আসনের বর্তমান এমপি জাতীয় বীর কর্নেল (অবঃ) শওকত আলী। নড়িয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী হাচান আলী রাড়ীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা, উপজেলা, বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের তৃনমুল পর্যায়ের নেতা কর্মীরা।
জানা যায় ১৯৭৯ সাল থেকে টানা ৪০ বছরে সাত বার আ. লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়ে আসছেন কর্নেল (অব.) শওকত আলী। বর্তমানে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে আগামী নির্বাচন করবেন না বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। সে ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের দুর্গম ঘাটি হিসেবে পরিচিত এই আসনে আ. লীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ করছেন অনেকেই। কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ে ইমেজ সংকটের কারনে পিছিয়ে আছেন অনেকেই। মনোনয়নের দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামিম ও বর্তমান সাংসদের পুত্র ডা. খালেদ শওকত আলী। এছাড়া মনোয়নয়ন প্রত্যাশি রয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এ্যাড. সুলতান মাহমুদ সিমন ও সংরক্ষিত আসনের এমপি অ্যাডভোকেট নাভানা আক্তার।
ডাক্তার খালেদ শওকত আলী বর্তমান সাংসদ কর্নেল শওকত আলীর কনিষ্ঠ পুত্র। তিনি দেশের বাইরে থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১২ সাল পর্যন্ত খালেদ মধ্যপ্রাচ্যে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। এরপর দেশে এসে তিনি তার বাবা শওকত আলী সংসদের ডেপুটি স্পিকার থাকাবস্থায় তার হাত ধরে এলাকার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। কর্নেল (অব.) শওকত আলীর সাথে খালেদ শওকত নির্বাচনী এলাকার সব সভা-সমাবেশে সম্পৃক্ত হন। এলাকার উন্নয়নে তার পিতাকে সবসময় দিকনির্দেশনা দিয়ে আসছেন। খালেদ ‘৭১ ফাউন্ডেশন নামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি নড়িয়া উন্নয়ন সমিতি, নড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও মাজেদা হাসপাতালের কর্ণধার।
এছাড়া সামাজিক সংগঠনের সাথেও তিনি জড়িত রয়েছেন। বেশ কিছুদিন যাবৎ ডা. খালেদ নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন। তার পিতা কর্নেল (অব.) শওকত আলী ৬ বার এই আসন থেকে আ. লীগের টিকিটে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তার বয়স ৮০ বছর অতিক্রম করায় এবং স্বাস্থ্যের ক্রমাবনিত ঘটায় তার পারিবারিক সিদ্ধান্ত মতে পুত্র খালেদ শওকত আলীর জন্য দলীয় মনোনয়ন চাওয়া হবে।
খালেদ শওকত আলীর প্রত্যাশা স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শওকত আলীর অবদান এবং নির্বাচনী এলাকায় দীর্ঘ ৪ দশক আ. লীগকে শক্তিশালী করার ভূমিকার কথা বিবেচনা করে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে।
মানচিত্রে দুই জেলার উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এ আসনটি নড়িয়া উপজেলা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানা নিয়ে গঠিত। এ আসনে নড়িয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা এবং সখিপুর থানার ৯টি ইউনিয়ন। যার মোট ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৭৭ জন। এর মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৪ জন। তবে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ হলে মোট ভোটারের সংখ্যা আরো সাড়ে ৪ থেকে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।