
শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে শরীয়তপুর-৩ (গোসাইরহাট-ডামুড্যা-ভেদরগঞ্জ) আসনে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপির নেতা তারেক রহমানের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী মিয়া নুরুদ্দিন অপুর প্রচারনায় হামলা চালিয়েছে সন্ত্রীরা। এ ঘটনায় মিয়া নুরুদ্দিন অপু সহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এতে বিএনপি বলছে আওয়ামীলীগ হামলা করেছে। আওয়ামীলীগ বলেছে, বিএনপির হামলায় বিএনপি প্রার্থী আহত হয়ে আওয়ামীলীগের উপর প্রবাকান্ডা ছড়াচ্ছে।
সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার সময় গোসাইরহাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবনের সামনের সড়কে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় নুরুদ্দিন অপু গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বিএনপি ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, মিয়া নুরুদ্দিন অপু তার উপজেলার কোদালপুরের বাড়ি থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারনা চলাতে চালাতে একটি মিছিল নিয়ে গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। মিছিলটি গোসাইরহাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবনের সামনের সড়কে পৌছলে এই হামলার শিকার হয়। এ ঘটনায় নুরুদ্দিন অপু সহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের প্রায় ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
হামলায় আহতরা হলেন গোসাইরহাট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিল ভূইয়া (৪৫), আলালপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি বাবু ঢালী (৩৫), আহবায়ক মো. রিপন (৩৪), সদস্য মঞ্জুর হাওলাদার (৩৫), কুচাইপট্টি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমামুল গাজি (২০), গোসাইরহাট উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য ও আলালপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম (২৬), ছত্রনেতা রাশেদ (২১), নিরবের (২২) নাম পাওয়া গেছে।
জেলা মহিলা দলের সম্পাদিকা আসমা উল হুসনা বলেন, বিএনপির নির্বাচনী প্রচারনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে বিএনপির প্রার্থী নুরুদ্দিন অপু সহ ৩০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। নুরুদ্দিন অপুর অবস্থা গুরুতর। তার মাথা ফেটে গেছে। তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আবারও হামলার জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে।
জেলা বিএনপি সাধার সম্পাদক সরদার একেএম নাসিরউদ্দিন বলেন, আহত মিয়া নূরুউদ্দিন আপু শরীয়তপুর-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী তারেব রহমানের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী । তার এলাকায় যথেষ্ট সমর্থন রয়েছে বলেই তাকে আওয়ামীলীগ সমর্থকরা হামলা করেছে।
আহত মিয়া নুরদ্দিন আহমেদ অপু বলেন, ১০ হাজার লোক নিয়ে কোদালপুর ইউনিয়ন থেকে একটি মিছিল নিয়ে গোসাইরহাট পৌরসভার হেলিপ্যাড মাঠে অবস্থান করা মাত্র পরিকল্পিত ভাবে আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীরা লাঠি, চাইনিজ কুড়াল নিয়ে তেড়ে এলে আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গালিগালাজ করতে করতে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমি জনগনের কাছে এর বিচার চাই।
এদিকে গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যন ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নাসির উদ্দিন বলেন, তাদের বিএনপির মধ্যে কোন্দল রয়েছে। যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাতে বিএনপি একমত হতে পারেনি। প্রর্থী বিএনপির সকলের পছন্ধমত না হওয়ায় মনোনয়ন পাওয়ায় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ডামুড্যা উপজেলায় ঝাড়– মিছিলও করেছে। এ কারনে গোসাইরহাটে বিএনপির দুটি দল। বিএনপির প্রার্থী ঢাকা থেকে আসবে বলেই তাদের বড় একটি পক্ষ মিছিল তাদের উপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় তাদের প্রার্থী আহত হয়েছে। আওয়ামীলীগ বা ছাত্রলীগ তাদের উপর হামলা করেনি।
ঘটনা পরবর্তী গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমগীর হোসাইন এবং গোসাইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা কোদালপুর ১০ শয্যা বিশিষ্ট মাও শিশু হাসপাতালে ধানের শীষের প্রার্থী মিয়া উরুদ্দিন অপুকে দেখতে যায়। নুরুদ্দিন অপুকে এয়ার এম্বুলেন্স যোগে ঢাকায় নিয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যান্য নেতাকর্মীদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার আলগীর হোসাইন বলেন, অনাকাঙ্খিত একটা ঘটনায় ধানের শীষের প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন অপু আহত হওয়ার সংবাদ পেয়ে কোদালপুর মাও শিশু চিকিৎসা কেন্দ্রে যাই। এয়ার এম্বুলেন্স যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, নিএনপি ও আওয়ামীলীগের মুখোমুখি মিছিলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।