
নিজস্ব প্রতিবেদক : শরীয়তপুর সদর উপজেলায় লাবনী আক্তার (১৯) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে শৌলপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সারেঙ্গা গ্রাম থেকে লাবনীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাবনী ওই গ্রামের দরিদ্র কৃষক আলী আকবর মাদবরের মেয়ে ও শরীয়তপুর সরকারী কলেজের ছাত্রী। গত দুই মাস আগে একই ইউনিয়নের উত্তর শৌলপাড়া মুন্সিকান্দি গ্রামের কুদ্দুস মুন্সীর ছেলে নাঈম মুন্সির সাথে লাবনীর বিয়ে হয়। লাবনী এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চার বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে আর বাকিগুলোয় অংশগ্রহণ করেনি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, লাবনী ও নাঈমের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক জানাজানি হলে উভয় পরিবারের সম্মতিতে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বাপের বাড়িতে থেকেই লাবনী এবার এইসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চারটি পরীক্ষা দিয়ে আর দেয়নি। কিছুদিন আগে লাবনীকে শশুর বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার (১ মে) বিকালে লাবনীর মা লাবনীকে তার শশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি নিয়ে যায়। এরপর রাতে মায়ের হাতে খাওয়া দাওয়া সেরে লাবনী ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ঘুম থেকে জেগে লাবনী সকালে আর নাস্তা করেনি। সকাল ১০টার দিকে বাড়ির দোচালা একটি টিনের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় লাবনী। কিছুক্ষণ পর লাবনীর মা লাবনীকে ডাকাডাকি করলে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে দেখে লাবনী ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঝুলে আছে। এ সময় মায়ের ডাক চিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে লাবনীকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে। ততক্ষনে লাবনী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে। খবর পেয়ে পালং মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাবনীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন।
লাবনীর বাবা আলী আকবর মাদবর বলেন, শুনেছি ঘর নির্মাণের জন্য মেয়ের কাছে ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেছে নাঈম ও তার পরিবার। শশুর বাড়ির লোকজনের অপমান ও খারাপ ব্যবহারের কারণে লাবনী আত্মহত্যা করতে করতে পারে।
এ বিষয়ে লাবনীর শাশুড়ি বলেন, গতকাল লাবনীর মা লাবনীকে আমাদের বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। আজকে সকাল ১০ টার দিকে খবর পাই লাবনী আত্মহত্যা করেছে। কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা বলতে পারবো না। আমার ছেলে নাঈম ঢাকায় রয়েছে। এ খবর পেয়ে সে ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়েছে।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।