
সিনিয়র রিপোর্টার : শরীয়তপুরে প্রেম করে বিয়ে করার এক মাস দুই দিনের মাথায় ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে স্ত্রী লাবনী আক্তারের আত্মহত্যার চার দিন পর এবার গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করলেন স্বামী নাঈম মুন্সি (২৩)। সোমবার (৬ মে) বিকালে সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়নের উত্তর শৌলপাড়া মুন্সিকান্দি গ্রামের পরিত্যক্ত ঘর থেকে নাঈমের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নাঈম ওই গ্রামের কুদ্দুস মুন্সীর ছেলে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (০২ মে) দুপুরে একই ইউনিয়নের পশ্চিম সারেঙ্গা গ্রাম থেকে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেচানো নাঈমের স্ত্রী লাবনী আক্তারের (১৯) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাবনী ওই গ্রামের কৃষক আলী আকবর মাদবরের মেয়ে। সে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের ছাত্রী ছিলেন।
লাবনী আত্মহত্যা করার পর তার বাবা আলী আকবর মাদবর বলেছিলেন, শুনেছি ঘর নির্মাণের জন্য মেয়ের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেছে নাঈম ও তার পরিবার। শ্বশুর বাড়ির লোকজনের অপমান ও খারাপ ব্যবহারের কারণে লাবনী আত্মহত্যা করতে করতে পারে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, স্কুলে পড়া অবস্থায় নাঈম ও লাবনীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৮ মার্চ পারিবারিক ভাবে নাঈমের সঙ্গে লাবনীর বিয়ে হয়। বিয়ের দুইদিন পর লাবনীকে তার বাপের নেয়া হয় এবং নাঈম তিন দিন পর ঢাকা চলে যায়। নাঈম ঢাকায় একটি প্লাষ্টিকের কারখানায় কাজ করতেন। লাবনী আত্মহত্যা করার আগের দিন শ^শুর বাড়ি থেকে লাবনীকে বাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। বাপের বাড়ি যাওয়ার পরের দিন সকাল ১০ টার দিকে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে লাবনী আত্মহত্যা করে। লাবনীর আত্মহত্যার খবর শুনে নাঈম অসুস্থ হড়ে পড়ে। পরে সুস্থ হলে পরের দিন ঢাকা থেকে দেশে আসে নাঈম।
এ তখন লাবনীর আত্মহত্যার বিষয়ে লাবনীর শাশুড়ি শাহানাজ বেগম বলেছিলেন, লাবনী কিারণে আত্মহত্যা করেছে তা বলতে পারবো না। আমার ছেলে নাঈম ঢাকায় রয়েছে। খবর পেয়ে সে ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছে।
নাঈমের আত্মহত্যার বিষয়ে নাঈমের বাবা কুদ্দুস মুন্সী বলেন, ছেলে-মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো। পরে আমরা দুই পরিবার সম্পর্ক মেনে নিয়ে তাদের বিয়ে দেই। কিন্তু বিয়ের পর মেয়ের পরিবার আমার ছেলের কাছে তাদের মেয়ে দিতে চায়নি। তারা অন্যখানে মেয়ের বিয়ে দিতে চেয়েছিলো। কিন্তু এতে মেয়ে রাজি না থাকায় মেয়ের পরিবার মেয়েকে অত্যাচার করে। তাদের অত্যাচারের কারণে তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করে। আমার ছেলে দেশে আসার পর মেয়ের পরিবারের তাকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। এ কারণেই আমার ছেলে নাঈম আত্মহত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন বলেন, নাঈমের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।