আজ মঙ্গলবার, ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ইতালি যাওয়ার পথে শরীয়তপুরের ৪ যুবক নিখোঁজ

অভাব-অনটনের সংসারে ভাগ্য ফেরাতে ঝুঁকিপূর্ণ পথে লিবিয়া হয়ে ইউরোপ পাড়ি দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন শরীয়তপুরের চার যুবক। ছয় মাস হয়ে গেলেও পরিবার জানে না তাদের কোনো খবর। বেঁচে আছেন কিংবা মারা গিয়েছেন কিছুই জানেন না পরিবারের সদস্যরা।

নিখোঁজ চার যুবক হলেন ডামুড্ডা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বিন্দাইকাঠি গ্রামের তিন সন্তানের জনক কামাল বেপারি, মঠেরকান্দি গ্রামের আলী আকবর ও রায়হান এবং শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের শওকত ফকির।

নিখোঁজ যুবকদের পরিবারের অভিযোগ, ইসলামপুর ইউনিয়নের বিন্দাইকাঠি গ্রামের বাচ্চু বেপারি ইতালি নেয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে বন্দি করে ফেলেন চারজনকে। পরে বাচ্চু বেপারি মোবাইল ফোনে ইতালি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে চার লাখ করে টাকা নেয়ার পর আরও ৪ লাখ টাকা করে নেন। টাকা হাতে পাওয়ার পর আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি বাচ্চু বেপারির।

তারা আরও জানান, ধারদেনা ও ভিটা বিক্রি করে টাকা পাঠান বাচ্চুকে। তবে এরই মধ্যে ঘটনার ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও মিলছে না তাদের কোনো খবর। সন্তান ও স্বামীকে ফিরে পাওয়ার আশায় পথ চেয়ে আছেন তারা।

নিখোঁজ কামাল বেপারির স্ত্রী খাদিজা বলেন, ‘আমার স্বামী একজন টাইলস মিস্ত্রি ছিলেন। আমাদের সংসার ভালোই চলত। হঠাৎ করে বাচ্চু বেপারি এসে ইতালিতে অনেক টাকা আয় করার প্রলোভন দেখান। পরে চার লাখ টাকা দিয়ে তাকে লিবিয়া নিয়ে যান। এর কয়েক দিন পরেই ফোন করেন বাচ্চু বেপারি। লিবিয়া তেমন কাজ না থাকায় তাদের ইতালি নিয়ে যাচ্ছেন বলে আমাদের জানান। এতে আরও চার লাখ টাকা লাগবে বলে জানান।’

‘আমার শ্বশুরের ভিটেমাটি বিক্রি ও আমার বাবার বাড়ি থেকে কিছু টাকা এনে চার লাখ টাকা পাঠাই বাচ্চু বেপারিকে। এর পর আর কোনো খোঁজ মেলেনি আমার স্বামীর। এখন সে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে কিছুই জানি না। এ বিষয়ে দালাল বাচ্চু বেপারির বাড়িতে জানতে গেলে তার পরিবারের লোকজন আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘তিনটি সন্তান নিয়ে আমি খুব বিপদে আছি। আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই। আমরা এর একটি সঠিক বিচার চাই।’

নিখোঁজ চার ব্যক্তির প্রত্যেক পরিবারের একই চাওয়া–তাদের স্বামী অথবা সন্তানকে ফেরত পাওয়া।

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবার, ভাবমূর্তি হারাচ্ছে দেশ। মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করেও দালাল বাচ্চু বেপারির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।