আজ মঙ্গলবার, ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

শুস্ক মৌসুমেও শরীয়তপুরে পদ্মায় হঠাৎ ভাঙন

ইলিয়াছ মাহমুদ ॥ শুষ্ক মৌসুমে হঠাৎ করেই শরীয়তপুরের নড়িয়ার সুরেশ্বর রক্ষাবাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৩শ’ মিটার ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ স্কুল-কলেজ এবং মসজিদ-মাদরাসা সহ সুরেশ্বর দরবার শরীফ।

স্থানীয়রা জানায়, গত শনিবার পদ্মা নদীর ডান তীরে সুরেশ্বর দরবার শরীফ রক্ষাবাঁধের সুরেশ্বর দরবার শরীফের পূর্ব পাশে এ বাঁধের বিশাল এলাকাজুড়ে ধসে যায়। গত চার দিনে প্রায় ৩শ’ মিটার পদ্মা নদীর তীর রক্ষাবাঁধ এবং বাঁধ সংলগ্ন ২শ’ মিটার এলাকাজুড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বাঁধের বিশাল একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে সুরেশ্বর গ্রাম, সুরেশ্বর কলেজ, সুরেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়, মধ্য সুরেশ্বর জামে মসজিদ ও সুরেশ্বর বাজার। এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার রাতে কয়েকজনের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলে পদ্মাপাড়ের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সরকারের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে ধসে যাওয়া বাঁধ মেরামতের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

প্রসঙ্গত গত দুই বছরে পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার প্রায় ৭ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে ৮ হাজার বসত বাড়ি, ১৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ১ কিলোমিটার সুরেশ^র রক্ষা বাধ, ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৫৫ মসজিদ মাদরাসা সহ প্রায় ৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার সম্পদ। এ ক্ষতি এড়াতে জাজিরা-নড়িয়া পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প ২ জানুয়ারি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকার এ প্রকল্পের আওতায় ৯ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ ও চর ড্রেজিং করা হবে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে এ প্রকল্পের কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। শুস্ক মৌসুমে বাধ নির্মান করা না গেলে আগামী বর্ষায় নড়িয়া উপজেলা সদর বিলিন হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত শনিবার সুরেশ^র রক্ষা বাঁধের পার্শ্ববর্তী ২শ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। হঠাৎ ধ্বসে পরার বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরা জরুরি ভিত্তিতে রাজস্ব খাত থেকে ধসে যাওয়া বাঁধ মেরামত করার চেষ্টা করছি। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে প্রকল্পের প্রশাসনিক আদেশ জারী হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জিং। আমরা কাজ চলমান রেখে নদী ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করবো।