আজ বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

এনামুল হক শামীম উপমন্ত্রী হওয়ায় আনন্দে ভাসছে পদ্মা পাড়ের মানুষ

দীর্ঘ বছর পদ্মার ভাঙনের কবলে নড়িয়াবাসী। নদীর ভাঙ্গা-গড়া মানুষের জীবনের এই মানুষগুলোর মুখে আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে। তার একটাই কারন নড়িয়ায় নতুন নেতার নেতৃত্ব আসছে। এরপরে আবার উপ-মন্ত্রী এতে তাদের আশার আলো। তাদের নতুন নেতা ও অভিভবক হলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরীয়তপুরের কৃতি সন্তান নবনির্বাচিত এমপি এনামুল হক শামীম।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার খবরে আনন্দে ভাসছে পদ্মা পাড়ের সর্বহারা নড়িয়া ও সখিপুরের মানুষ। রবিবার বিকাল থেকে সোমবার পর্যন্ত আনন্দ উল্লাস ও মিষ্টি বিতরন আব্যাহত।

পদ্মা নদীর ডানতীর রক্ষা ও বেড়ীবাধ বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ভাঙ্গনের শিকার এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নবনির্বাচিত এমপি এনামুল হক শামীম বিগত দিনে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গনের শিকার সর্বহারা মানুষের পাশে ছিলেন। তিনি সরকারী ও নিজ উদ্যোগে সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। বেড়ীবাধ নির্মাণে এনামুল হক শামীমের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।এবার তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপ-মন্ত্রী হওয়ায় ভাঙ্গনকবলিত মানুষের প্রতি তার দায়িত্ব আরো বেড়ে গেছে। এ কারণে পদ্মাপাড়ের মানুষ খুবই আশাবাদী ও আনন্দিত। তারা আনন্দে নিজেরা নিজেদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করেছে।

নড়িয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল ওহাব বেপারী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরীয়তপুরের কৃতি সন্তান এনামুল হক শামীম আওয়ামীলীগের টিকিটে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হয়েই পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন তিনি। আর এ খবরে আনন্দে ভাসছে পদ্মা পাড়ের সর্বহারা নড়িয়া ও সখিপুরের মানুষ। তারা খবর পাওয়ার পর থেকে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ অব্যাহত রখেছেন।

ভাঙ্গন কবলীত এলাকা নড়িয়া পৌরসভার মেয়র শহীদুল ইসলাম বাবু রাড়ি বলেন, তারা খবর পাওয়ার পর থেকে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ অব্যাহত রখেছেন। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতাকর্মী শুভাকাঙ্খীরা এনামুল হক শামীকে অভিনন্দন জানিয়ে পোষ্ট দিচ্ছেন। দীর্ঘদিন পর এই অঞ্চলে কেউ মন্ত্রী হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে আনন্দ উচ্ছাসের পরিমাণ একটি বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

কেদারপুর ইনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ভাঙ্গন কবলিত ইমাম হোসেন দেওয়ান বলেন, পদ্মার ভাঙমে নড়িয়াবাসী সবকিছু হারিয়েছেন। এনামুল হক শামীম এমপি হওয়ার আগেও চেষ্টা তদবীর করে ভাঙনকবলিতদের জন্য কাজ করেছেন। এবার তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন এতে পদ্মাপাড়ের মানুষ খুব আনন্দিত। কারন দীর্ঘ ত্রিশ বছর যাবত এই এলাকা পদ্মায় ভাঙলেও স্থায়ী সমাধান হয়নি। এবার এনামুল হক শামীম মন্ত্রী হওয়ায় পদ্মা পাড়ের মানুষ আাশার আলো দেখছেন। তাই তারা খুবই আনন্দিত।

সাইদুল হক মুন্না বলেন, স্বাধীনতার পরে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করেছে চারবার। কিন্তু নড়িয়া মন্ত্রী হয়েছে এই প্রথমবার। এটা আমাদের নদী ভাঙনকবলীতদের জন্য সৌভাগ্যের, আনন্দের এবং গর্বের। ভাঙন কবলিতদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এর চেয়ে বড় কোন আশির্বাদ আর হয়না। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাধুবাদ জানাই। এতোদিন আমরা শামীম ভাইকে সাথে নিয়ে যেই দপ্তরে যেতাম আজ তিনি সেই চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবেন। এর চেয়ে আমাদের আর কি পাওয়ার আছে।

সখিপুর থানা আওয়ামীলীগ সভাপতি হুমায়ন কবির মোল্লাহ বলেন, উপ-মন্ত্রী করায় আমরা নড়িয়া-সখিপুরের মানুষে খুবই আনন্দিত। কারণ দীর্ঘদিন আমাদের এই এলাকায় কোন মন্ত্রী ছিলোনা। এজন্য আমরা আনন্দ মিছিল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিষ্টি বিরতণ করছি। এছাড়া এনামুল হক শামীমকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী করায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শামীম ভাই মন্ত্রী হওয়ায় এ অঞ্চলের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এদিকে গত রোববার রাতে ও সোমবার সকালে ঢাকা সদরঘাট থেকে নড়িয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা লঞ্চ যাত্রীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেছেন ঢাকাস্থ নড়িয়া ও সখিপুরের সন্তান। এরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শহীদ সোহরাহওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। বিতরন কালে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলী সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নাল আবেদীন রাসেল, কবি নজরুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান ও সোহরাহওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহম্মেদ।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতাকর্মী শুভাকাঙ্খীরা এনামুল হক শামীমকে অভিনন্দন জানিয়ে পোষ্ট দিচ্ছেন। দীর্ঘদিন পর এই অঞ্চলে কেউ মন্ত্রী হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে আনন্দ উচ্ছাসের পরিমাণ একটি বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

প্রসঙ্গত শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরভাগা এলাকার কৃতি সন্তান এনামুল হক শামীম জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। ২০১২ সালে তাকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়। এরপর সম্মেলনের মধ্যদিয়ে তিনি দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। প্রথমবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি ২ লাখ ৭৩ হাজার ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। এ আসনে এর আগে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে ছয়বার এমপি নির্বাচিত হন কর্ণেল (অবঃ) শওকত আলী। তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ থাকায় এবার তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।